সাম্প্রতিক মনিপুর
মনিপুর খুব বর্নময়। বর্ষার ইম্ফলেরতো তুলনা নেই।কাল মেঘ সারা আকাশে।আচমকা বিদ্যুৎ চমকায়।গাড়ীতে যেতে যেতে ওই আলো- আঁধারে চোখে পড়ে যায় অভিমানী কাংলা দূর্গ।ওই দূর্গের পরতে পরতে ইতিহাসের ছোঁয়া।একদা ওর ভেতরেই জন্মনিয়েছিল আজকের মনিপুর।কাংলার সামনেই ফাঁসিতে ঝোলান হয়েছিল বৃটিশবিরোধী লড়াইএর সেনানী রাজকুমার টিকেন্দ্রজিৎ বীর সিংকে। মনিপুর খুব সুন্দর।সেখানকার প্রকৃতি ও বাসিন্দারাও।ইরিল নদী ও লোকটাক- সূর্যাস্তের আলোয় কবিতা হয়ে যায়।এই জনপদ বহুবছর ধরে আমার প্রিয়।ভালবাসারও।কতবছর হয়ে গেল সেখানে যাচ্ছি।কখনো শান্ত,ধীর ইম্ফলে,কখনো আবার আগুন জ্বলা উপত্যকায়।মনোরমার খুন হওয়া,বিনিতার শহীদ হওয়া,চিত্তরন্জনের আত্মহনন,মনোরমার মায়ের সেই বিষাদমুখ কখনো ভুলবনা।মনিপুরের গ্রাম,শহর বস্তি,বাজারে ঘুরতে ঘুরতে তথাকথিত গনতান্ত্রিক আইন আফস্পার নির্মমতা দেখেছি।যা তুলে নেওয়ার দাবীতে কাংলা দূর্গের সামনে মায়েরা নগ্ন প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন।চিত্তরন্জন আত্মহত্যা কোরেছিলেন।আর দীর্ঘ ১৬ বছর অনশন চালিয়েছেন ইরম শর্মিলা চানু।অনশন,লড়াইএর জন্যে যেমন আর আজ তা থেকে সরে আশার কারনে সে আবারও সংবাদ শিরোনামে।শর্মিলা অনশন ভেংগেছেন তা তার সিদ্ধান্ত। অনেকেই বোলছেন যে সারাজীবন একটি মেয়ে বৃহত্তর সমাজের মুখ চেয়ে নিজের যাবতীয় সুখ,আনন্দ,চাওয়া,পাওয়া বিসর্জন দেবে তা কোন যুক্তি হোতে পারেনা।১০০ শতাংশ ঠিক কথা।একমত।শর্মিলা বোলেছেন,তিনি দেবী নন।এও ঠিক।মানবীর চাহিদা শর্মিলার থাকবে এটাইতো স্বাভাবিক।অনেকে লিখছেন শর্মিলাই জানিয়েছেন আফস্পা কত বিপদজনক।অনেকে শর্মিলার হয়ে কথা বোলতে গিয়ে অজান্তে নিজেরাই তাকে দেবী কোরে তুলছেন।এমনিতেই শর্মিলা লার্জার দ্যান লাইফ।নাহলে তার মাথায় সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার ইচ্ছে জাগতোনা।কিন্তুু শর্মিলার কথা বোলতে গিয়ে আমরা বোধহয় তার অনশন ভাংগা যারা মানতে পারছেন না তাদের পুরোপুরি খলনায়ক কোরে দিচ্ছি।তারমধ্যে শর্মিলার মাও পরিবারের অন্যরাও আছেন।প্রথমত,শর্মিলা আন্দোলনের মধ্য দিয়েই আজকের আইকন হয়ে উঠেছিল।শর্মিলার পিছনে ছিল মনিপুরের মহিলাদের দীর্ঘদিনের লড়াইএর ইতিহাস।১৯০৪ ও ১৯৩৯ বৃটিশ বিরোধী বিদ্রোহ -- যা ইতিহাস হয়ে আছে প্রথম ও দ্বিতীয় নুপিলান নামে।তার নেতৃত্বে ছিলেন মহিলারাই।মনিপুর একমাত্র রাজ্য যেখানে একদিন মশাল হাতে প্রতিবাদী মিছিলে হাঁটতেন শুধু মহিলারাই।মহিলাদের সংগঠন মেরাপাইবি বহুদিনধরে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাশের বিরুদ্ধে সতত সোচ্চার।তাদেরই১১ জন অসমসাহসী নগ্ন হয়েছিলেন।আফ্স্পার বিরুদ্ধে।শর্মিলা চানুও নিছক আকাশ থেকে নেমে আসা কোন দেবী নন।অজস্র ত্যাগ,শহীদ হওয়া,ধর্ষিতা কয়েকশো নারী,সন্তান হারা মায়ের কান্নার মধ্যে দিয়ে উঠে আসা এক আইকন।সমষ্ঠির মধ্য দিয়েইতো নেতা উঠে আসেন।তাই একজনকে মহৎ কোরতে গিয়ে আমরা যেন অনেকের অনেক হারিয়ে যাওয়া,ত্যাগকে ছোট না কোরি।আসলে শর্মিলারর ওপরে কিছুটা অভিমান হয়েছে মনিপুরের।হয়তো।তাও কিন্তু স্বাভাবিক।শর্মিলার আজ প্রবল খ্যাতি সে মুখ্যমন্ত্রী হবার স্বপ্ন দেখতেই পারে।কিন্তু মনোরামার মাতো আজও বসে আছেন মেয়ের খুনীদের শাস্তির আশায়।বা মার্সি কাবুই যাকে দিনের পর দিন ধর্ষন করা হয়েছে,ভলিবল মাঠে যে ১৩ জনকে গুলি কোরে মারা হয়েছিল,তাদের পরিবার,এমন অজস্র পরিবারের কাছেও শর্মিলা ছিল আশার ও বিশ্বাসের প্রতিক।যে কারনেই হোক আশাভংগের কিছু বিরুপ প্রতিক্রিয়াও তাই অস্বাভাবাবিক নয়।আর একটা কথা,যারা মনিপুরের সমাজকে একটুও জানেন তারা বুঝবেন মনিপুরের অভিমানের পিছনে আরও একটা কারন আছে।মনিপর কোনদিন,কখনো,প্রাচীনকাল থেকে আত্মসমর্পন মেনে নিতে শেখেনি।পারেওনি।তাই রবীন্দ্রনাথের চিত্রাংগদা নিয়ে সেখানে বুদ্ধিজীবিমহলে প্রশ্ন আছে।তাদের কাছে ব্যাখ্যা নেই কোন যুক্তিতে তাদের রাজকন্যা উচ্চবর্গের অর্জুনের কাছে নিজেকে সমর্পন কোরবে! একই আবেগে বিরাটসংখ্যখক মনিপুরির কাছেও আজ প্রশ্ন কোন যুক্তিতে শর্মিলা চানু আজ প্রতিষ্ঠানের কাছে মাথা নোয়ালেন! শুধুই নতুন পথে চলবেন বোলে!
মনিপুর খুব বর্নময়। বর্ষার ইম্ফলেরতো তুলনা নেই।কাল মেঘ সারা আকাশে।আচমকা বিদ্যুৎ চমকায়।গাড়ীতে যেতে যেতে ওই আলো- আঁধারে চোখে পড়ে যায় অভিমানী কাংলা দূর্গ।ওই দূর্গের পরতে পরতে ইতিহাসের ছোঁয়া।একদা ওর ভেতরেই জন্মনিয়েছিল আজকের মনিপুর।কাংলার সামনেই ফাঁসিতে ঝোলান হয়েছিল বৃটিশবিরোধী লড়াইএর সেনানী রাজকুমার টিকেন্দ্রজিৎ বীর সিংকে। মনিপুর খুব সুন্দর।সেখানকার প্রকৃতি ও বাসিন্দারাও।ইরিল নদী ও লোকটাক- সূর্যাস্তের আলোয় কবিতা হয়ে যায়।এই জনপদ বহুবছর ধরে আমার প্রিয়।ভালবাসারও।কতবছর হয়ে গেল সেখানে যাচ্ছি।কখনো শান্ত,ধীর ইম্ফলে,কখনো আবার আগুন জ্বলা উপত্যকায়।মনোরমার খুন হওয়া,বিনিতার শহীদ হওয়া,চিত্তরন্জনের আত্মহনন,মনোরমার মায়ের সেই বিষাদমুখ কখনো ভুলবনা।মনিপুরের গ্রাম,শহর বস্তি,বাজারে ঘুরতে ঘুরতে তথাকথিত গনতান্ত্রিক আইন আফস্পার নির্মমতা দেখেছি।যা তুলে নেওয়ার দাবীতে কাংলা দূর্গের সামনে মায়েরা নগ্ন প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন।চিত্তরন্জন আত্মহত্যা কোরেছিলেন।আর দীর্ঘ ১৬ বছর অনশন চালিয়েছেন ইরম শর্মিলা চানু।অনশন,লড়াইএর জন্যে যেমন আর আজ তা থেকে সরে আশার কারনে সে আবারও সংবাদ শিরোনামে।শর্মিলা অনশন ভেংগেছেন তা তার সিদ্ধান্ত। অনেকেই বোলছেন যে সারাজীবন একটি মেয়ে বৃহত্তর সমাজের মুখ চেয়ে নিজের যাবতীয় সুখ,আনন্দ,চাওয়া,পাওয়া বিসর্জন দেবে তা কোন যুক্তি হোতে পারেনা।১০০ শতাংশ ঠিক কথা।একমত।শর্মিলা বোলেছেন,তিনি দেবী নন।এও ঠিক।মানবীর চাহিদা শর্মিলার থাকবে এটাইতো স্বাভাবিক।অনেকে লিখছেন শর্মিলাই জানিয়েছেন আফস্পা কত বিপদজনক।অনেকে শর্মিলার হয়ে কথা বোলতে গিয়ে অজান্তে নিজেরাই তাকে দেবী কোরে তুলছেন।এমনিতেই শর্মিলা লার্জার দ্যান লাইফ।নাহলে তার মাথায় সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার ইচ্ছে জাগতোনা।কিন্তুু শর্মিলার কথা বোলতে গিয়ে আমরা বোধহয় তার অনশন ভাংগা যারা মানতে পারছেন না তাদের পুরোপুরি খলনায়ক কোরে দিচ্ছি।তারমধ্যে শর্মিলার মাও পরিবারের অন্যরাও আছেন।প্রথমত,শর্মিলা আন্দোলনের মধ্য দিয়েই আজকের আইকন হয়ে উঠেছিল।শর্মিলার পিছনে ছিল মনিপুরের মহিলাদের দীর্ঘদিনের লড়াইএর ইতিহাস।১৯০৪ ও ১৯৩৯ বৃটিশ বিরোধী বিদ্রোহ -- যা ইতিহাস হয়ে আছে প্রথম ও দ্বিতীয় নুপিলান নামে।তার নেতৃত্বে ছিলেন মহিলারাই।মনিপুর একমাত্র রাজ্য যেখানে একদিন মশাল হাতে প্রতিবাদী মিছিলে হাঁটতেন শুধু মহিলারাই।মহিলাদের সংগঠন মেরাপাইবি বহুদিনধরে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাশের বিরুদ্ধে সতত সোচ্চার।তাদেরই১১ জন অসমসাহসী নগ্ন হয়েছিলেন।আফ্স্পার বিরুদ্ধে।শর্মিলা চানুও নিছক আকাশ থেকে নেমে আসা কোন দেবী নন।অজস্র ত্যাগ,শহীদ হওয়া,ধর্ষিতা কয়েকশো নারী,সন্তান হারা মায়ের কান্নার মধ্যে দিয়ে উঠে আসা এক আইকন।সমষ্ঠির মধ্য দিয়েইতো নেতা উঠে আসেন।তাই একজনকে মহৎ কোরতে গিয়ে আমরা যেন অনেকের অনেক হারিয়ে যাওয়া,ত্যাগকে ছোট না কোরি।আসলে শর্মিলারর ওপরে কিছুটা অভিমান হয়েছে মনিপুরের।হয়তো।তাও কিন্তু স্বাভাবিক।শর্মিলার আজ প্রবল খ্যাতি সে মুখ্যমন্ত্রী হবার স্বপ্ন দেখতেই পারে।কিন্তু মনোরামার মাতো আজও বসে আছেন মেয়ের খুনীদের শাস্তির আশায়।বা মার্সি কাবুই যাকে দিনের পর দিন ধর্ষন করা হয়েছে,ভলিবল মাঠে যে ১৩ জনকে গুলি কোরে মারা হয়েছিল,তাদের পরিবার,এমন অজস্র পরিবারের কাছেও শর্মিলা ছিল আশার ও বিশ্বাসের প্রতিক।যে কারনেই হোক আশাভংগের কিছু বিরুপ প্রতিক্রিয়াও তাই অস্বাভাবাবিক নয়।আর একটা কথা,যারা মনিপুরের সমাজকে একটুও জানেন তারা বুঝবেন মনিপুরের অভিমানের পিছনে আরও একটা কারন আছে।মনিপর কোনদিন,কখনো,প্রাচীনকাল থেকে আত্মসমর্পন মেনে নিতে শেখেনি।পারেওনি।তাই রবীন্দ্রনাথের চিত্রাংগদা নিয়ে সেখানে বুদ্ধিজীবিমহলে প্রশ্ন আছে।তাদের কাছে ব্যাখ্যা নেই কোন যুক্তিতে তাদের রাজকন্যা উচ্চবর্গের অর্জুনের কাছে নিজেকে সমর্পন কোরবে! একই আবেগে বিরাটসংখ্যখক মনিপুরির কাছেও আজ প্রশ্ন কোন যুক্তিতে শর্মিলা চানু আজ প্রতিষ্ঠানের কাছে মাথা নোয়ালেন! শুধুই নতুন পথে চলবেন বোলে!
No comments:
Post a Comment